অবশেষে রাজ্যদের আপত্তির কাছে নতিস্বীকার করে ধার নিয়ে জিএসটি ক্ষতিপূরণের টাকা মেটাবে বলে জানাল কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বলা হয়েছে যে ১.১ লক্ষ কোটির যে ঘাটতি হয়েছে সেটা ধার নেবে কেন্দ্র সরকার ও তারপর সেই টাকা ধার দেওয়া হবে রাজ্যদের। এতে দুপক্ষই রাজি হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্যগুলির ভয় ছিল তারা বাজার থেকে ধার নিলে অনেক বেশি সুদ দিতে হবে।
গত তিনটি জিএসটি কাউন্সিল বৈঠকে কোনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি। এক দেশ, এক ট্যাক্সের কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয়ের মঞ্চ জিএসটি কাউন্সিল হয়ে উঠেছিল সংকীর্ণ রাজনীতির জায়গা। মহামারীর জন্য জিএসটি সংগ্রহে যে ঘাটতি হয়েছে, সেই টাকাটি রাজ্যদের বাজার থেকে ধার নিতে বলেছিল কেন্দ্র। কিন্তু বাংলা সহ বিরোধী রাজ্যগুলি আপত্তি করে। এমনকি আদালতে যাওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছিল। তবে কেন্দ্রের সাম্প্রতিক প্রস্তাবের পর এই বিতর্ক শেষ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই সিদ্ধান্তের বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে রাজ্যদের চিঠি লিখেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তিনি বলেছেন কেন্দ্র ধার নেবে, তারপর কেন্দ্রের থেকে ধার নেবে রাজ্যরা। সুদের হার খুব বেশি হবে না। সুদ ও আসল, পুরোটাই জিএসটি সেস থেকে উঠে আসবে। রাজ্যদের সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হবে বলেও জানান নির্মলা সীতারামন।
অর্থমন্ত্রক জানিয়েছে যে এই টাকা ধার নেওয়ায় তাদের ঋণের বোঝা বাড়বে না কারণ এটা রাজ্যরা যে লগ্নি পাচ্ছে কেন্দ্রের থেকে, সেই খাতে দেখানো হবে। লোনটি ক্যাপিটাল রিসিপট হিসেবে দেখানো হবে। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন কেরালার অর্থমন্ত্রী থমাস আইজ্যাক। তবে কতটা ক্ষতিপূরণ ২০২৩ অবধি পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেই নিয়ে প্রশ্ন করেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এক বরিষ্ঠ আধিকারিক জানান যে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র প্রথম থেকেই বলছিলেন যে কেন্দ্রের সরাসরি আরবিআই থেকে ধার নেওয়া উচিত, সব রাজ্য আলাদা আলাদা করে যাওয়ার থেকে।
যে সাতটি রাজ্য কেন্দ্রের প্রস্তাব মেনে নেয়নি তার মধ্যে অন্যতম ছিল কেরালা ও পশ্চিমবঙ্গ। ২৭ অগস্ট কেন্দ্র বলেছিল যে রাজ্যগুলি ১.১ লক্ষ কোটি ধার নিক বা ২.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা ধার নিক, যেটার জন্য সুদও দিতে হবে। প্রসঙ্গত, কোভিডের জেরে মোট ২.৩৫ লক্ষ কোটি টাকার ঘাটতি হয়েছে রাজস্বে। এর মধ্যে ১.১ লক্ষ কোটি হল কোভিড ছাড়া অন্য খাতে ঘাটতি। সেটা সুদ ছাড়া টাকা ধার নিয়ে নেওয়ার বিকল্প দেয় কেন্দ্র। কিন্তু সেটা মানেনি রাজ্য। অবশেষে মান বাঁচাতে সমঝোতার পথে গেল কেন্দ্র। তাদের ধারের বোঝাও বাড়ল না, অন্যদিকে কাজটিও হয়ে গেল।